অঙ্গন বেলঘড়িয়ার আয়োজনে মিনার্ভা থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হলো শুভেন্দু মজুমদার স্বরণ অনুষ্ঠান ও নাটক "শেষ মুঘল বাহাদুর শাহ জাফর"
সম্প্রতি কলকাতার মিনার্ভা থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হলো অঙ্গন বেলঘড়িয়ার আয়োজনে ইছাপুর আলেয়ার নাট্যদলের কর্ণধার অকাল প্রয়াত নাট্য পরিচালক ও অভিনেতা শুভেন্দু মজুমদার স্বরণ সন্ধ্যা। শুভেন্দুবাবুর নাটকের জীবন, তার কাজ,নির্দেশনা ও অভিনয় নিয়ে স্মৃতি চারণ করেন ড হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায়, নাট্যকার মৈনাক সেনগুপ্ত, পরিচালক সঞ্জয় সেনগুপ্ত, দেবাশীষ সরকার, সৌগত মুখার্জী, জয়দীপ ভৌমিক, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশ ভট্টাচার্য, শ্যামল চক্রবর্তী, দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইছাপুর আলেয়ের সদস্য নিতাই গুপ্ত এবং অঙ্গন বেলঘড়িয়ার কর্ণধার অভি সেনগুপ্ত, প্রয়াত শুভেন্দু মজুমদার এর স্ত্রী সুমিতা মজুমদার ও পুত্র অনুভব মজুমদার। এই স্বরণ অনুষ্ঠান টি পরিচালনায় ছিলেন ইছা পুর আলেয়া দলের সদস্য দীপক মিত্র।এই স্বরণ অনুষ্ঠানের পর মঞ্চস্থ হয় অঙ্গন বেলঘড়িয়ার নতুন নাটক শেখ মুঘল বাহাদুর শাহ জাফর । আমরা সকলেই জানি ইংরেজ রা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী প্রতিস্থাপন করে দিনের পর দিন ভারতবর্ষ তথা এই বাংলায় অত্যাচার চালিয়ে গেছে। পাশাপাশি অন্যায় ভাবে ছল চাতুরী করে একের পর এক রাজ্য দখল করে, কাউকে হত্যা করে, গুম করে বল পূর্বক কেড়ে নিয়েছে তাদের অধিকার। ভারতের ইতিহাসের সেই রকম এক কালো অধ্যায় এর নাম বিয়োগান্ত নায়ক বাহাদুর শাহ জাফর, যিনি ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের শেষ মুঘল বাহাদুর শাহ জাফর। তিনি এক সময় সিপাহী বিদ্রোহের নেতৃত দিয়েছিলেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ইংরেজ রা এক সাজানো বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতের এই শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ কে নির্বাসনে পাঠায় বর্মা মুলুকে এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।সেদিন ভারতবর্ষের মানুষ চুপ করে ছিলো। এই বাহাদুর শাহ তার আপন দেশে অন্তিম শয়ানে শায়িত হবার জন্য দু গজ জমিও তার জুটলো না।এই আপেক্ষ ধোনিত হয়েছিল ভারতের শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের কণ্ঠে। এই বন্ধ্যা সময়ের প্রেক্ষাপটে একজন হতমান মানুষের জীবন যন্ত্রনা ও বোধ কে আশ্রয় করে রূপ নিয়েছে অভি সেনগুপ্ত নির্দেশনা য় অঙ্গন বেলঘড়িয়া র নতুন নাটক শেষ মুঘল বাহাদুর শাহ জাফর। এই নাটকে অসাধারণ অভিনয় করেছেন (বাহাদুর শাহ জাফর এর ভূমিকায়) অভি সেনগুপ্ত, (উজির আহসানুল্লাহ খান এর ভূমিকায়) গুঞ্জন গাঙ্গুলী, (ক্যাপ্টেন ওমানি) সুরজিৎ শর্মা, (শাহজাদা জওয়ান বখত) রজত নন্দী, (মৌলভী সরফরাজ আলী) তপন বিশ্বাস, (মুবারক উন্নিসা) শিপ্রা মুখার্জী ও (জিন্নাত বেগম) এর চরিত্রে বেবি সেনগুপ্ত।পাশাপাশি সৌমেন চক্রবর্তী-সায়ন সেনগুপ্তের আলোক ভাবনা-প্রেক্ষাপন,তপন বিশ্বাস-তিথি বিশ্বাস এর অবহ সংগীত- আবহ প্রেক্ষাপন, অশেষ কর্মকারের মঞ্চ, বাপ্পাদিত্য প্রামানিকের পোশাক ও রূপ সজ্জা যথাযথ। ভালো লাগে অনিন্দিতা দে র কণ্ঠে সংগীত। এই নাটক টি লিখেছেন শঙ্কর বসু ঠাকুর। সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন অরূপ ব্যানার্জী। সব শেষে বলবো নির্দেশক অভি সেনগুপ্তর পরিচালনায় সম্পুর্ন রূপে ঐতিহাসিক পটভূমিকায় এই নাটক শেষ মুঘল বাহাদুর শাহ জাফর দর্শকদের বিশেষ ভাবে নজর কাড়বে। সাধুবাদ অঙ্গন বেলঘড়িয়া কে এই রকম একটি নাটক মঞ্চস্থ করার জন্য।